রবিবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৪, ০৪:৩৯ পূর্বাহ্ন

আশরাফ আলী থানভী রহ. এবং বেহেশতি জেওর
রিপোর্টারের নাম / ১৬৭ কত বার
আপডেট: বৃহস্পতিবার, ১০ জুন, ২০২১

আশরাফ আলী থানভী রহ. এবং বেহেশতি জেওর
▬▬▬ ◈◉◈▬▬▬
◈ প্রশ্ন: আশরাফ আলী থানভী রহ. কে ছিলেন? ‘হাকিমুল উম্মাহ’ অর্থ কি? তাকে কেন হাকিমুল উম্মাহ বলা হয়?
উত্তর:
আশরাফ আলী থানভী [জন্ম: ১৮৬৩, মৃত্যু: ১৯৪৫ খৃষ্টাব্দ] ছিলেন একজন দেওবন্দী সূফী ধারার আলেম। চিশতিয়া তরিকার অনুসারী। তিনি ভারতের উত্তর প্রদেশের থানাভবন এ জন্মগ্রহণ করার কারণে তাকে ‘থানভী’ বলা হয়। ভারত উপমহাদেশ এবং এর বাইরেরও অসংখ্য মানুষ তার কাছ থেকে সুফিবাদি শিক্ষা গ্রহণ করার কারণে তিনি “হাকীমুল উম্মত” (উম্মাহর আত্মিক চিকিৎসক) উপাধিতে পরিচিত।
আমাদের দেশের দেওবন্দি হানাফিদের কাছে তিনি একজন বড় মাপের আধ্যাত্মিক গুরু ও পীর হিসেবে পরিগণিত। বাংলাদেশেও তার পরতন্ত্রের খলিফা রয়েছে। তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য তিনজন খলিফা হলেন:
এক. মাওলানা শামছুল হক ফরিদপুরী রহ.
দুই.মাওলানা আব্দুল ওয়াহহাব পীরজি হুজুর রহ.
তিন. মাওলানা মোহাম্মাদুল্লাহ হাফেজ্জি হুজুর রহ.
[সূত্র: dailyinqilab]

উল্লেখ্য যে, পীর-মুরিদি তন্ত্র এবং সুফি তন্ত্র হল, বিদআতি তন্ত্র। সুতরাং যারা এতে বিশ্বাসী তারা বিদআতে নিমজ্জিত।
বিস্তারিত পড়ুন:
https://www.facebook.com/Abdllahilhadi/posts/3763325833767163

তার লেখা বহু সংখ্যক বইয়ের মধ্যে ‘বেহেশতি যেওর’ নামক হানাফি ফিকহের কিতাবটি বাংলা ও উর্দুভাষী মানুষের নিকট সর্বাধিক সমাদৃত। এছাড়াও তার উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ সমূহের মধ্যে বয়ানুল কুরআন, আদাবুল মুআশারাত, মকবুল মোনাজাত ইত্যাদি প্রসিদ্ধ।

◈ প্রশ্ন: বেহেশতী জেওর এ কিতাব টি কি সহীহ?

উত্তর:
এটি দেওবন্দি আকিদার বিশিষ্ট আলেম আশরাফ আলী থানভী রহ. এর লেখা একটি ফিকহ এর কিতাব। এটি উর্দু ভাষায় রচিত। যার বাংলা অনুবাদ করেছেন, বাংলাদেশের সুপরিচিত হানাফি আলেম শামসুল হক ফরিদপুরী রহ. [লালবাগ জামিয়া কুরআনিয়া আরাবিয়া কওমি মাদ্রাসা সহ গওহর ডাঙ্গা কওমি মাদ্রাসা, ফরিদাবাদ কওমি মাদ্রাসা এবং বড় কাটারা কওমি মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা]। এটি পাক-ভারত উপমহাদেশে খুবই জনপ্রিয় একটি কিতাব।

স্বভাবতই এ বইটি হানাফি মাজহাব ও দেওবন্দি মাসলাকের উপর ভিত্তি করে বিভিন্ন মাসআলা-মসায়েল লেখা হয়েছে। তবে গবেষকদের দৃষ্টিতে এতে এমন বহু মাসআলা-মসায়েল ও কথাবার্তা রয়েছে যেগুলো সহিহ সুন্নাহ ও সহিহ আকিদা পরিপন্থী। এতে নানা শিরকি ও বিদআতি কথাবার্তা রয়েছে বলে অনেক আলেম অভিযোগ করেছেন। যেমন: শিরকি তাবিজ-কবজ ও তাবিজের নকশা ইত্যাদি।

[বি. দ্র. তদন্ত করতে গিয়ে দেখা গেলো, ‘বেহেশতি জেওর’ মূল কিতাবে ‘নাওয়াইতু আন” নামক গদবাধা নিয়তের উল্লেখ নাই। বরং লেখক বলেছেন, “মুখে নিয়ত বলা আবশ্যক নয়” (যদিও তিনি মুখে নিয়ত উচ্চারণ কে বিদআত বলেন নি বা তার প্রতিবাদও করেন নি অথচ তা সমাজে ব্যাপকভাবে প্রচলিত)।” কিন্তু অনুবাদক নিজের পক্ষ থেকে প্রত্যেক সালাতের জন্য আরবি নিয়ত এবং তার বাংলা অনুবাদ সংযুক্ত করেছেন। যা খুবই খুবই দু:খ জনক।
সুতরাং এ ক্ষেত্রে মুল লেখক থানবী রহ. কে দোষারোপ করা সমীচীন নয়। বরং এর দায়-দায়িত্ব বর্তাবে অনুবাদক শামছুল হক ফরিদপুরীর উপর।]
বেহেশতি জেওর, নিয়ামুল কোরআন, নাফেউল খালায়েক, মোকছুদুল মুমিনীন ইত্যাদি বইয়ের ব্যাপারে বহু আলেম সতর্ক করেছেন।

সুতরাং সর্বসাধারণের জন্য এ সকল বই পড়া থেকে বিরত থাকাই নিরাপদ।
▬▬▬▬◯◍◯▬▬▬▬
উত্তর প্রদানে:
আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল
(লিসান্স, মদিনা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়)
দাঈ, জুবাইল দাওয়াহ এন্ড গাইডেন্স সেন্টার, সৌদি আরব

আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর..
জনপ্রিয় পোস্ট
সর্বশেষ আপডেট