গিবত ও সমালোচনা কারীর মুখ বন্ধ করার এবং তা থেকে বাঁচার সহজ উপায়
▬▬▬▬✪✪✪▬▬▬▬
প্রশ্ন: আমাদের বেশিরভাগ আত্মীয়-স্বজন ও বন্ধু-বান্ধব ইসলামিক নয়। ফলে তাদের সাথে দেখা-সাক্ষাতের সময় ইচ্ছায় বা অনিচ্ছাকৃত অন্যদের গিবত শুনতে হয় বা অনেক সময় গিবত করা হয়ে যায়। এ থেকে বাঁচার উপায় কি?
উত্তর:
গিবত তথা অসাক্ষাতে কারও দোষত্রুটি সমালোচনা করা কবিরা গুনাহ। তদ্রূপ গিবত শুনা ও গিবতকে প্রশ্রয় দেয়াও গুনাহের শামিল।
গিবত শোনা উচিৎ নয় এ কারণে যে, এতে গিবত কারী প্রশ্রয় পায়। তাই হয় তাকে বাধা দিতে হবে অথবা তার নিকট থেকে সরে যেতে হবে এবং যে বৈঠকে পরচর্চা হয় সেখান থেকে উঠে যেতে হবে; অন্যথায় গুনাহের ভাগীদার হতে হবে।
– কেউ গিবত করতে চাইলে তাকে প্রথমে বুঝিয়ে বলার চেষ্টা করুন যে, আপনি যার ব্যাপারে সমালোচনা করছেন, বিষয়টি সরাসরি তাকেই বলা উচিত। তাহলে হয়ত সে সংশোধন হওয়ার সুযোগ পাবে।
– তাকে বলুন, কারো ব্যাপারে ভালো কিছু জানলে বলুন আর খারাপ কিছু জানলে দয়া করে চুপ থাকুন।
– অথবা সম্ভব হলে যার সমালোচনা করা হচ্ছে তার পক্ষ থেকে জবাব দিন।
– তাও সম্ভব না হলে তার নিকট থেকে দূরে সরে যান।
-যে বৈঠকে গিবত হচ্ছে সেখান থেকে উঠে যান। চুপচাপ বসে মানুষের দোষ-ত্রুটি ও সমালোচনা শুনবেন না। এতে গিবত কারী আরও উৎসাহ পাবে এবং আপনিও গুনাহে শরিক হবেন। আল্লাহ ক্ষমা করুন।
গিবত বা পরচর্চা কুরআন ও সুন্নায় কঠোরভাবে নিষেধ করা হয়েছে। তাই এ বিষয়টিকে হালকা ভাবে গ্রহণ করার কোন সুযোগ নাই।

যে বৈঠকে আল্লাহর বিধানকে অবজ্ঞা করা হয় সেখান থেকে উঠে যাওয়ার নির্দেশ দিয়ে আল্লাহ তাআলা বলেন,
إِذَا سَمِعْتُمْ آيَاتِ اللَّـهِ يُكْفَرُ بِهَا وَيُسْتَهْزَأُ بِهَا فَلَا تَقْعُدُوا مَعَهُمْ حَتَّىٰ يَخُوضُوا فِي حَدِيثٍ غَيْرِهِ ۚ إِنَّكُمْ إِذًا مِّثْلُهُمْ ۗ
“যখন আল্লাহ তাআলার আয়াতসমূহের প্রতি অস্বীকৃতি জ্ঞাপন ও বিদ্রূপ হতে শুনবে, তখন তোমরা তাদের সাথে বসবে না, যতক্ষণ না তারা প্রসঙ্গান্তরে চলে যায়। তা না হলে তোমরাও তাদেরই মত হয়ে যাবে।” [সূরা নিসা: ১৪০]

আল্লাহ তাআলা আরও বলেন,
وَإِذَا رَأَيْتَ الَّذِينَ يَخُوضُونَ فِي آيَاتِنَا فَأَعْرِضْ عَنْهُمْ حَتَّىٰ يَخُوضُوا فِي حَدِيثٍ غَيْرِهِ ۚ وَإِمَّا يُنسِيَنَّكَ الشَّيْطَانُ فَلَا تَقْعُدْ بَعْدَ الذِّكْرَىٰ مَعَ الْقَوْمِ الظَّالِمِينَ
“যখন আপনি তাদেরকে দেখেন, যারা আমার আয়াত সমূহে ছিদ্রান্বেষণ করে, তখন তাদের কাছ থেকে সরে যান যে পর্যন্ত তারা অন্য কথায় প্রবৃত্ত না হয়, যদি শয়তান আপনাকে ভুলিয়ে দেয় তবে স্মরণ হওয়ার পর জালেমদের সাথে উপবেশন করবেন না। ” [সূরা আনআম: ৬৮]
পরিশেষে, মানুষের অসাক্ষাতে কারো দোষ-ত্রুটি নিয়ে সমালোচনা ও বদনাম করার ব্যাপারে যেমন আমাদের সতর্ক হওয়া কর্তব্য ঠিক তেমনি এগুলোকে প্রশ্রয় দেয়া বা শোনার ব্যাপারেও সতর্ক হব। আল্লাহ আমাদেরকে হেফাজত করুন। আমীন।
——————–
উত্তর প্রদানে:
আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল
দাঈ, জুবাইল দাওয়াহ এন্ড গাইডেন্স সেন্টার, সৌদি আরব
Leave a Reply