রুকিয়া/ঝাড়ফুঁক সংক্রান্ত অডিও-ভিডিও শুনার বিধান
▰ ▰ ▰ ▰ ▰ ▰ ▰ ▰ ▰ ▰
প্রশ্নঃ
YouTube এ রুকিয়ার অনেক অডিও-ভিডিও আছে যেগুলোতে কুরআনের বিভিন্ন স্থান থেকে যাদু, বদনজর ও জিন সংক্রান্ত কিছু আয়াত বিভিন্ন কারীদের কণ্ঠের তিলাওয়াত একত্রিত করে সেগুলো রোগীর নিকট কয়েক ঘণ্টা ব্যাপী প্লে করে রাখতে বলা হয়। এই অডিওগুলো শুনলে না কি রোগী শিফা পাবে? এ ভিডিওগুলো কতটা নির্ভরযোগ্য এবং এভাবে অডিও শুনে শিফা পাওয়ার পদ্ধতিটি কি হাদীস সম্মত ?
উদাহরণ হিসেবে একটি ভিডিও ক্লিপ দেয়া হল:
▰▰▰▰▰▰▰▰▰▰
উওরঃ
আপনার প্রদত্ব ভিডিও ক্লিপ থেকে কিছু আয়াতের তিলাওয়াত শুনলাম। কিন্তু বিনা দলীলে এখানে তিলাওয়াতকৃত সবগুলো আয়াতকে রুকিয়ার আয়াত বলা কিভাবে গ্রহনযোগ্য হতে পারে?
হ্যাঁ, অবশ্যই কুরআনে শিফা রয়েছে। কিন্তু বিশেষ কোনও আয়াত বা সূরাকে রুকিয়ার আয়াত বলতে হলে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে দলীল থাকা জরুরি।
আরেকটি বিষয় হল, কুরআনের এখান-ওখান থেকে ইচ্ছামত কতগুলো আয়াত বা সূরার তিলাওয়াত একত্রিত করে সেগুলো শুনলে জিন-বদনজর, যাদু-টোনার থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে এ তথ্য কোথা থেকে পাওয়া গেল?
এ বিষয়ে সউদী আরবের স্থায়ী ফতোয়া বোর্ডের ফতোয়া দেখুন:
❑ রেকর্ডার (অডিও/ভিডিও) কি রুকিয়াকারী (ঝাড়ফুঁক দাতা) এর স্থলাভিষিক্ত হতে পারে?
প্রশ্ন: কুরআনের বিভিন্ন স্থান থেকে যাদু, বদনজর ও জিন সংক্রান্ত কিছু আয়াত একত্রিত করে সেগুলোর তিলাওয়াত রোগীর নিকট কয়েক ঘণ্টা ব্যাপী প্লে করে রাখার বিধান কি?
উত্তর: আল হামদুলিল্লাহ-সকল প্রশংসা আল্লাহর জন্য।
কুরআন তিলাওয়াত ও দুআর রেকর্ড প্লে করে রাখা হলে তা রুকিয়া (ঝাড়ফুঁক) এর জন্য যথেষ্ট হবে না। কেননা রুকিয়া (ঝাড়ফুঁক) এমন একটি আমল যা সম্পাদন করার সময় নিয়ত থাকতে হবে এবং রোগীর শরীরে সরাসরি ফুঁ দিতে হবে। যন্ত্র দ্বারা এগুলো সম্ভব নয়। আল্লাহু আলাম।
– স্থায়ী ফতোয়া বোর্ড-সউদী আরব
❑ ফোনের সাহায্য রুকিয়া (ঝাড়ফুঁক):
ফোনের মাধ্যমে রুকিয়া (ঝাড়ফুঁক) সংক্রান্ত একটি প্রশ্নের উত্তরে সউদী স্থায়ী ফতোয়া বোর্ড ফতোয়া দেয়:
রুকিয়া (ঝাড়ফুঁক )হতে হবে সরাসরি রোগির শরীরে। মাইক বা ফোনের মাধ্যমে তা হবে না। কারণ এটি রুকিয়ার ক্ষেত্রে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, সাহাবায়ে কেরাম এবং তাবেঈদের নিয়মের পরিপন্থী। আর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন:
مَنْ أَحْدَثَ فِيْ أَمْرِنَا هَذَا مَا لَيْسَ مِنْهُ فَهُوَ رَدٌّ
“যে ব্যক্তি আমার এ দ্বীনের ভিতরে কোন নতুন জিনিস উদ্ভাবন করবে, যার ভিত্তি এ দ্বীনে নেই, সেটা অবশ্যই পরিত্যাজ্য।” (বুখারী ও মুসলিম) আল্লাহু আলাম।
❑ আমাদের করণীয়:
সুতরাং এ সব অডিও/ভিডিওতে মনোযোগ না দিয়ে আমাদের করণীয় হল, হাদীসে বর্ণিত সূরা ও দুআর মাধ্যমে রুকিয়া করা। যেমন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইখলাস, ফালাক ও নাস এ তিনটি সূরা সকাল-সন্ধ্যা তিনবার করে, ৫ ওয়াক্ত সালাতের পরে একবার করে পড়তে বলেছেন এবং ঘুমের পূর্বে উক্ত তিনটি সূরা পড়ে শরীরে হাত মাসেহ করার নির্দেশনা দিয়েছেন। অনুরূপভাবে সূরা ফাতিহা ঝাড়ফুঁকের জন্য অত্যন্ত কার্যকর একটি সূরা। এ ছাড়াও সহীহ হাদীসে অনেক দুআ বর্ণিত হয়েছে সেগুলো যথানিয়মে আমল করলে আল্লাহর রহমতে সকল প্রকার জিনের সংক্রামন, বদনয, যাদু-টোনা ইত্যাদি থেকে মুক্ত থাকা সম্ভব। আল্লাহ তাওফিক দান করুন। আমীন।
●●●●●●●●●●●
উত্তর প্রদানে:
আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলিল
লিসান্স, মদীনা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, সৌদি আরব।
দাঈ, জুবাইর দাওয়াহ এন্ড গাইডেন্স সেন্টার, সৌদি আরব।
আসসালামু আলাইকুম ওয়ারহমাতুল্লাহ। আভাস মাল্টিমিডিয়া.কম এ ওয়েবসাইটটি সম্পূর্ণরূপে বিশুদ্ধ ঈমান ও আমলের দাওয়াতী ওয়েবসাইট। এটি সম্পূর্ণ ব্যাক্তিগত উদ্যোগে পরিচালিত এবং কোন প্রকার দল / সংগঠনের অন্তর্ভুক্ত নয়। আমাদের আক্বীদাহ আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামা‘আতের আক্বীদাহ। আমাদের মানহাজ সালাফে সালেহীনদের মানহাজ। আমাদের দাওয়াত শিরকমুক্ত, কুফরমুক্ত, নিফাক্বমুক্ত ও বিদ‘আতমুক্ত ঈমান ও আমলের উপর প্রতিষ্ঠিত। তাওহীদ ও সুন্নাত ভিত্তিক ঈমান ও আমল গড়ে তোলাই আমাদের লক্ষ্য।
Leave a Reply