প্রশ্ন (১) : এক মহিলার তালাক হওয়ার পর ইদ্দত পালন শেষে যদি পরবর্তিতে আবার বিবাহ করতে চায় তাহলে কি তার জন্য অভিভাবকের অনুমতি লাগবে? না-কি সে নিজেই বিবাহ করতে পারবে?
-শামীম
নারায়ণগঞ্জ।
উত্তর : কুমারী, বিধবা ও তালাকপ্রাপ্তাসহ সকল মহিলার বিবাহে তার অভিভাবক থাকা শর্ত। নবী a বলেছেন, ‘অভিভাবক ব্যতীত বিবাহ শুদ্ধ হবে না’ (তিরমিযী, হা/১১০১; আবূ দাঊদ, হা/২০৮৫; ইবনু মাজাহ, হা/১৮৮১; আহমাদ, হা/১৯৭৪৬; মিশকাত, হা/৩১৩০)। রাসূলুল্লাহ a আরো বলেছেন, ‘কোনো নারী অন্য কোনো নারীকে বিবাহ দিতে পারে না এবং কোনো নারী নিজেও বিবাহ করতে পারে না। যে নারী নিজে বিবাহ করে সে ব্যভিচারিণী’ (ইবনু মাজাহ, হা/১৮৮২; মিশকাত, হা/৩১৩৭)। সুতরাং তালাকপ্রাপ্তা মহিলাও নিজে নিজের বিবাহ দিতে পারবে না, সুতরাং তার পরের বিবাহতেও অভিভাবকের অনুমতি লাগবে। উল্লেখ্য যে, ছহীহ মুসলিমের ১৪২১ নং হাদীছে বর্ণিত হয়েছে যে, নবী বলেছেন, الأَيِّمُ أَحَقُّ بِنَفْسِهَا مِنْ وَلِيِّهَا ‘পূর্ব বিবাহিতা তার নিজের ব্যাপারে অভিভাবকের তুলনায় অধিক হক্বদার’ এই হাদীছের অর্থ হলো, স্বামী পছন্দের ক্ষেত্রে অভিভাবকের চেয়ে সেই মহিলারই বেশি অধিকার রয়েছে। কিন্তু সে অভিভাবকের শর্ত থেকে মুক্ত নয়।
প্রশ্ন (২) : এক আলেম বলেছেন যে, মনে মনে তালাক দিলে হবে না, আর অন্য আলেম বলেছেন যে, তালাক হবে৷ এখন আমরা কোনটা গ্রহন করব?
-নাছিম মিয়া
ফরিদপুর।
উত্তর : মুখে উচ্চারণ না করে যদি মনে মনে স্ত্রীকে তালাক দেওয়ার নিয়্যত করে, তাহলে সেটি তালাক হিসেবে গণ্য হবে না। কেননা রাসূল a বলেছেন, ‘আল্লাহ তাআলা আমার উম্মতের জন্য তাদের মনের কল্পনাগুলোকে মাফ করে দিয়েছেন যতক্ষণ না তা কথা বা কাজে পরিণত করে’ (ছহীহ বুখারী, হা/৫২৬৯, ছহীহ মুসলিম, হা/১২৭)। আর যদি মুখে উচ্চারণ করে, তাহলে স্ত্রী না জানলেও সেটি তালাক হিসেবে গণ্য হবে।
প্রশ্ন (৩) : এক ব্যক্তি দুই বছর আগে একজন বিবাহিত মহিলাকে বিয়ে করেছে। কিছুদিন আগে জানতে পারে ওই মহিলার আগের স্বামী তাকে তালাক দেয়নি এবং মহিলাও স্বামীর থেকে খোলা করেনি। এখন সেই ব্যক্তির করণীয় কি?
-মোহাম্মাদ আলমগীর
গাজীপুর।
উত্তর : যেহেতু আগের স্বামী থেকে তালাক হয়নি, তাই সেই মহিলা আগের স্বামীর স্ত্রী হিসেবেই আছে। আর কারো স্ত্রী থাকা অবস্থায় তাকে বিবাহ করলে সেটি বিবাহ হিসাবে গণ্য হবে না। বরং সহবাস করলে তা ব্যভিচার হিসাবে গণ্য হবে। আল্লাহ বলেন, ‘…সকল বিবাহিতা নারী তোমাদের জন্য নিষিদ্ধ’ (আন-নিসা ৪/২৪)। আর ব্যভিচার করা কবীরা গুনাহ (আল-ইসরা ১৭/৩২)। সুতরাং এমতাবস্থায় সেই মহিলার সাথে সংসার করা থেকে অবশ্যই বিরত থাকতে হবে। আর এই পাপের কারণে আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইতে হবে।