প্রশ্ন (১) : গার্মেন্টস থেকে পোশাক চুরি করেছি সেগুলো এখন কি করবো, ফিরিয়ে দিতে গেলে চাকরি থাকবে না এবং মান হানিও হতে পারি। আর এই পোশাক পরে কি আমার ছালাত হবে?
-নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক
ঢাকা।
উত্তর : গামের্ন্টসে চাকরিরত অবস্থায এভাবে কাপড় চুরি করা আত্মসাতের অন্তর্ভুক্ত। কেননা এসব মালামার কর্মচারীর কাছে আমানত হিসেবে থাকে। অতএব এসব কাপড় সম্ভবপর হলে মালিকের কাছে ফেরত দিতে হবে। আর সেটি সম্ভব না হলে অথবা ফেরত দিতে গেলে সমস্যা আশংকা থাকলে সেই পোশাকের সমমূল্য মালিকের নামে অথবা কোম্পানীর নামে ছাদাকাহ করতে হবে। রাসূলুল্লাহ a বলেছেন, যে ব্যক্তি তার ভাইয়ের সম্মানহানি বা অন্য কোন বিষয়ে যুলুমের জন্য দায়ী থাকে, সে যেন আজই তার কাছ হতে মাফ করিয়ে নেয়, সে দিন আসার পূর্বে যে দিন তার কোন দীনার বা দিরহাম থাকবে না। সে দিন তার কোনো সৎকর্ম থাকলে তার যুলুমের পরিমাণ তা তার নিকট থেকে নেওয়া হবে আর তার কোনো সৎকর্ম না থাকলে তার প্রতিপক্ষের পাপ থেকে নিয়ে তা তার উপর চাপিয়ে দেওয়া হবে (ছহীহ বুখারী, হা/২৪৪৯)। এই কাজটি করার পরে যদি সেই কাপড়ে ছালাত আদায় করে তাহলে তার সেই ছালাত ছহীহ হবে।
প্রশ্ন (২) : আমি আমার দুই বন্ধুর সাথে কিছু লোকের সম্পদ নষ্ট করেছি। সেই সম্পদ কার আমি জানি না। আমি ক্ষতিপূরণ দিতে চাই। এখন কী করলে তার হক্ব আদায় হবে এবং আল্লাহর কাছে থেকে ক্ষমা পাওয়া যাবে?
-রাকিব
চাঁদপুর।
উত্তর : বান্দার হক নষ্ট করার গুণাহ সেই বান্দা ক্ষমা না করলে আল্লাহও ক্ষমা করবেন না। বরং ক্বিয়ামতের দিন নেকি দিয়ে পরিশোধ করতে হবে। আবূ হুরায়রা c হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ a বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি তার ভাইয়ের সম্মানহানি বা অন্য কোন বিষয়ে যুলুমের জন্য দায়ী থাকে, সে যেন আজই তার কাছ হতে মাফ করিয়ে নেয়, সে দিন আসার পূর্বে যে দিন তার কোনো দীনার বা দিরহাম থাকবে না। সে দিন তার কোনো সৎকর্ম থাকলে তার যুলুমের পরিমাণ তা তার নিকট থেকে নেওয়া হবে আর তার কোনো সৎকর্ম না থাকলে তার প্রতিপক্ষের পাপ থেকে নিয়ে তা তার উপর চাপিয়ে দেওয়া হবে’ (ছহীহ বুখারী, হা/২৪৪৯)। সম্পদের মালিকের সম্পর্কে জানা না থাকার কারণে যে পরিমাণ সম্পদ নষ্ট করা হয়েছে সে পরিমাণ সম্পদ তার মালিকের নিয়্যতে আল্লাহর রাস্তায় ছাদাক্বা করতে হবে এবং আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করতে হবে। ইনশা-আল্লাহ আল্লাহ ক্ষমা করবেন।
প্রশ্ন (৩) : কোনো ঘরে ছবি থাকলে ছালাত হয় না। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় যে, কোনো ব্যক্তি ছালাতে দাঁড়ানোর পরে পকেট থেকে কোনো এমন টাকা বা পয়সা পড়ে গেল যেখানে মানুষের ছবি আছে এবং ছবিটি স্পষ্টভাবে দৃশ্যমান হচ্ছে। সেক্ষেত্রে কি আমার ছালাত হবে, না-কি ছালাত বাতিল হবে, না-কি মসজিদের সকল মুছল্লীদের ছালাত বাতিল হবে?
-নজরুল ইসলাম
ঠাকুরগাঁও।
উত্তর : পকেট থেকে যদি টাকা পড়ে যায় যাতে মানুষের ছবি আছে, সেই টাকা পুনরায় পকেটে তুলে নিতে হবে যাতে ছালাতের খুশূ-খুযূ নষ্ট না হয়। কেননা কাপড়ে ছবি থাকলে অথবা খোলা স্থানে টাকা বা ছবি পড়ে থাকলে সেখানে ছালাত আদায় করা উচিত নয়। এর কারণ হলো রাসূল a বলেছেন, ‘যেখানে কুকুর ও ছবি থাকে সেখানে ফেরেশতা প্রবেশ করে না’ (ছহীহ বুখারী, হা/৫৯৪৯; ছহীহ মুসলিম, হা/২৬; মিশকাত, হা/৪৪৮৯)।
প্রশ্ন (৪) : বিভিন্ন স্কুল, কলেজে দেখা যায় যে ক্লাসে শিক্ষক আসলে শিক্ষার্থীদেরকে দাঁড়িয়ে তাদেরকে সম্মান জানাতে হয়। এখন আমার প্রশ্ন হলো এভাবে সম্মান জানানো কি শরীয়তসম্মত হবে? আর যদি না হয় তাহলে আমাদের মতো শিক্ষার্থীদের করণীয় কী?
-মল্লিকা আক্তার
ময়মনসিংহ।
উত্তর : শিক্ষক শ্রেণিকক্ষে আসলে দাঁড়িয়ে তাকে সম্মান জানানো যাবে না, যিনি প্রবেশ করবেন তিনিই সালাম দিয়ে প্রবেশ করবেন। এটিই শরীয়তের মূলনীতি। রাসূলুল্লাহ a বলেছেন, যে লোক আনন্দিত হয় যে, মানুষ তার জন্য মূর্তির মতো দাড়িয়ে থাকুক, সে যেন জাহান্নামে তার বাসস্থান নির্দিষ্ট করে নেয় (তিরমিযী, হা/২৭৫৫)। আনাস c হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, ছাহাবীদের নিকট রাসূলুল্লাহ a-এর চাইতে বেশি প্রিয় ব্যক্তি আর কেউ ছিলেন না। অথচ তারা তাকে দেখে দাঁড়াতেন না। কেননা তারা জানতেন যে, তিনি এটা পছন্দ করেন না (তিরমিযী, হা/২৭৫৪)। সুতরাং শিক্ষক শ্রেণিকক্ষে আসলেই তাকে সম্মান দেওযার জন্য দাঁড়ানো যাবে না। আর যদি শিক্ষক তার সম্মানে দাঁড়ানোর আদেশ করে তাহলে তার সেই আদেশ মানা যাবে না। কারণ রাসূল a বলেছেন, لَا طَاعَةَ لِمَخْلُوقٍ فِي مَعْصِيَةِ الْخَالِقِ স্রষ্টার অবাধ্যতা করে সৃষ্টির কোন আনুগত্য নেই (তিরমিযী, ৩/৩২৫)।
উল্লেখ্য যে, বুখারী (৩৮০৪) ও মুসলিমের (১৭৬৯) এক বর্ণনাতে আছে যে, নবী a বলেছেন,قوموا إلي سيدكم তোমরা তোমাদের সর্দারের দিকে যাও’ এই বর্ণনা পেশ করে অনেকে দলীল দিতে চেয়েছেন যে, শিক্ষককে দেখে দাড়ানো যায়। কিন্তু আসলে বিষয়টি তেমন নয়। القيام إلي الناس ‘আগন্তুককে সম্মান জানানোর জন্য এগিয়ে যাওয়া’ আর القيام للناس ‘মানুষের সম্মানে দাড়ানো’ এক নয়। রাসূল a মানুষের সম্মানে দাঁড়াতে নিষেধ করেছেন আর মানুষকে স্বাগতম জানানোর জন্য দাঁড়িয়ে তার দিকে যেতে বলেছেন।
প্রশ্ন (৫) : ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট অর্থাৎ কোনো অনুষ্ঠানে যেমন. বিয়েতে গায়ে হলুদ, সেমিনার, জন্মদিনের ষ্টেজ, লাইটিং, ইত্যাদি সাজানো বা ডেকোরেশন এর ব্যবসা কি হালাল? এই ব্যবসা করা কি উচিত হবে?
-মুনতাসির মিরাজ
যাত্রবাড়ি, ঢাকা।
উত্তর: যে সকল অনুষ্ঠানে শরীয়তবিরোধী কাজ হয় অথবা অনুষ্ঠানগুলোই শরীয়তসম্মত নয় সেই অনুষ্ঠানগুলো সাজানো বা ডেকোরেশন করাও জায়েয নয়। প্রশ্নে উল্লিখিত গায়ে হলুদ, সেমিনার, জন্মদিনের স্টেজ এগুলো একটিও শরীয়তসম্মত নয়। তাই এগুলো ডেকোরেশনের ব্যবসা করাও জায়েয নয়। কেননা এতে অন্যায়কে সহযোগিতা করা হয়। আর আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘নেককাজ ও তাকওয়ায় তোমরা পরস্পর সাহায্য করবে এবং পাপ ও সীমালংঘনে একে অন্যের সাহায্য করবে না’ (আল-মায়েদা, ৫/২)।
প্রশ্ন (৬) : শায়খ আমরা জানি যে, জন্মদিন পালন করা হারাম। সেক্ষেত্রে জন্মদিন উপলক্ষে কেক বিজনেস করা কি হালাল হবে?
-মেহেদী হাসান
নাটোর সদর, নাটোর।
উত্তর : জন্মদিন পালন করা বিজাতীয়দের থেকে আসা একটি অপসংস্কৃতি যা শরীয়ত কর্তৃক অনুমোদিত নয়। আর রাসূল a বলেছেন, ‘আর যে ব্যক্তি যে জাতির সাদৃশ্য অবলম্বন করবে, সে তাদেরই দলভুক্ত’ (আবূ দাউদ, হা/৪০৩১)। সুতরাং জন্মদিন পালন করা জায়েয নয়। আর এই জন্মদিন পালন করার জন্য কোন সহযোগিতা করাও জায়েয নয়। আর তাই জন্মদিন উপলক্ষে কেকের বিজনেস করাও বৈধ নয়। কেননা এর মাধ্যমে বাতিলকে সহযোগিতা করা হয়। আল্লাহ বলেন, ‘নেককাজ ও তাকওয়ায় তোমরা পরস্পর সাহায্য করবে এবং পাপ ও সীমালংঘনে একে অন্যের সাহায্য করবে না’ (আল-মায়েদা, ৫/২)।
প্রশ্ন (৭) : জনৈক ছেলের এক মেয়েকে পছন্দ হয়েছে। এখন বিয়ে ঠিক হবে। ছেলেটা যৌতুক নিবে না, কিন্তু মেয়ের বাবা খুশি হয়ে কিছু টাকা দিবেই আর ছেলের বাড়ির সবাই টাকা নিবে। এখন এ টাকা কি নেওয়া যাবে?
-রুবেল ইসলাম
দিনাজপুর।
উত্তর: বিবাহে ছেলের কোন কিছু নেওয়া ইচ্ছা না থাকলেও, মেয়ের পিতা যৌতুক ছাড়াই স্বেচ্ছায় দিতে চাইলেও বর্তমান সমাজে যৌতুকের যে প্রথা রয়েছে তাকে প্রতিহত করার জন্য বিবাহ উপলক্ষে কোন কিছু নেওয়াও যাবে না এবং দেওয়াও যাবে না। কেননা এতে পাপের সহযোগিতা করা হবে। আর আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘নেককাজ ও তাকওয়ায় তোমরা পরস্পর সাহায্য করবে এবং পাপ ও সীমালংঘনে একে অন্যের সাহায্য করবে না’ (আল-মায়েদা, ৫/২)। সাথে সাথে আল্লাহ ও তাঁর রাসূল অর্থ দিয়ে বিবাহ করতে বলেছেন, অর্থ নিয়ে নয়। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তাদেরকে ন্যায়সংগতভাবে তাদের মোহর দিবে’ (আন-নিসা, ৪/২৫)। তবে বিবাহের অনুষ্ঠান ছাড়াই জামাই মেয়ের সাংসারিক জীবনকে লক্ষ্য করে কোন সময় মেয়ের পিতা মেয়েকে কোন কিছু দিতে পারে। আনাস c থেকে বর্ণিত, নবী a এক কৃতদাসকে সঙ্গে নিয়ে ফাতেমা g-এর নিকট এলেন, যে কৃতদাসটি তিনি তাকে দান করেছিলেন। ফাতেমা g-এর পরিধানে এরূপ একটি কাপড় ছিলো যা দিয়ে তিনি মাথা ঢাকলে পা দু’টিতে পৌঁছে না, আর পা ঢাকলে মাথা পর্যন্ত পৌঁছে না। নবী a তার এ অবস্থা দেখে বলেন, ‘তোমার কোনো পাপ হবে না, কারণ এখানে তো শুধু তোমার পিতা ও তোমার কৃতদাস রয়েছে’ (আবূ-দাউদ, হা/৪১০৬, মিশকাত, হা/৩১২০)।
প্রশ্ন (৮) : মেয়েরা কি হাতে বা পায়ে আলতা দিতে পারবে?
-ইনসান হাবীব
হাকিমপুর, দিনাজপুর।
উত্তর : না, হাতে বা পায়ে কোন মহিলা আলতা ও নেইল পালিশ দিতে পারবে না। কেননা এটি ইহূদী ও খ্রিষ্টানদের পতিতালয়ের মেয়েদের বৈশিষ্ট্য (বিস্তারিত দেখুন, বাসর রাতের আদর্শ, আলবানী)। তবে মেয়েদের হাত ও পায়ের নখে মেহেদী বা মেহেদী জাতীয় জিনিসগুলো দেওয়া জরুরী। কেননা একদিন জনৈকা মহিলা হাতে চিঠি নিয়ে পর্দার আড়াল হতে হাত বের করে রাসূলুল্লাহ a-এর দিকে ইশারা করল। নবী a নিজের হাতটি গুটিয়ে ফেলে বললেন, ‘আমি বুঝতে পারলাম না, এটা কি কোন পুরুষের হাত না কোন মহিলার হাত’? তখন মহিলাটি বললো, এটা মহিলার হাত। তখন তিনি a বললেন, ‘যদি তুমি নারী হতে তাহলে অবশ্যই মেহেদীর দ্বারা তোমার হাতের নখগুলো পরিবর্তন করে নিতে’ (আবূ দাউদ, হা/৪১৬৬; মিশকাত, হা/৪৪৬৭)।
প্রশ্ন (৯) : আমার বয়স ছাব্বিশ বছর। এখনই আমার চুল পেকে গেছে। আমার একটা প্রশ্ন হলো, আমি কি আমার চুল কালো করতে পারি?
-মো. রুমন ইসলাম
বরিশাল।
উত্তর: না, চুল কালো করা যাবে না। কেননা কালো খেযাব ব্যবহার করা নিষিদ্ধ। জাবের c থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ a বলেছেন, ‘তোমরা সাদা চুল কালো করা থেকে বেঁচে থাকো’ (ছহীহ মুসলিম, হা/২১০২, মিশকাত, হা/৪৪২৪)। তিনি আরো বলেছেন, ‘শেষ যামানায় এমন কিছু লোক হবে যারা কবুতরের বুকের ন্যায় কালো রঙের খেযাব দিয়ে চুল কালো করবে। তারা জান্নাতের সুগন্ধিও পাবে না’ (আবূ দাঊদ, হা/৪২১২; নাসাঈ, হা/৫০৭৫; মিশকাত, হা/৪৪৫২)। এমতাবস্থায় মেহেদী দিয়ে খিযাব করবে (তিরমিযী, হা/১৭৫৩)।
প্রশ্ন (১০) : মৃত ব্যক্তির নামে ইফতার মাহফিল করা যাবে কি?
-আব্দুর রহমান
গাইবান্ধা।
উত্তর : মৃত পিতা-মাতার নামে আমাদের সমাজে যে ইফতার মাহফিলের প্রথা চালু আছে তা শরীয়তসম্মত নয়। মৃত পিতা-মাতার নামে টাকা-পয়সা দান করতে হবে। আয়েশা g বলেন, এক ব্যক্তি নবী a-কে বলল, আমার মা হঠাৎ মারা গেছেন। আমার ধারণা যে, তিনি কথা বলার সুযোগ পেলে দান করে যেতেন। আমি যদি তার পক্ষ থেকে দান করি, তবে কি তিনি নেকি পাবেন? নবী a বললেন, হ্যাঁ’ (ছহীহ বুখারী, হা/১৩৮৮; ছহীহ মুসলিম, হা/১০০৪; মিশকাত, হা/১৯৫০)। তবে কেউ যদি মৃত পিতা-মাতার নামে ইফতারির ব্যবস্থা করতেই চান তাহলে তা করবে অসহায় ফকীর-মিসকীনদের জন্য। কেননা মৃত ব্যক্তির নামে যেটা প্রদান করা হয়, তা ছাদাক্বা। আর ছাদাক্বা সবাই খেতে পারে না। রাসূলুল্লাহ a বলেন, ‘আল্লাহ তাআলা তাদের উপর ছাদাক্বা (যাকাত) ফরয করেছেন, যা তাদের ধনীদের নিকট হতে গ্রহণ করা হবে এবং তাদের দরিদ্রদের মাঝে বণ্টন করা হবে’ (ছহীহ বুখারী, হা/১৪৯৬; ছহীহ মুসলিম, হা/১৯; মিশকাত, হা/১৭৭২)।
প্রশ্ন (১১) : মেয়েরা যখন বাইরে যাবে তখন মাহরামের সাথে যেতে হবে কিন্তু সবার মাহরামরা তো এরকম না। যেসব মেয়েরা পড়াশোনা করে অথবা চাকরি করে তাদের তো বাইরে আসা-যাওয়া করতে হয়। এক্ষেত্রে রিকশায় গেলে রিকশাওয়ালার সাথে একা যাওয়া হলো। যাদের গাড়ি আছে তাদের ড্রাইভারের সাথে যেতে হয়। এক্ষেত্রে মাহরাম পুরুষরা তো সবসময় সাথে যান না আর তাদেরও যার যার কাজ থাকে। এভাবে পড়াশোনা করা ও চাকুরী করা কি জায়েয?
-নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক
ফরিদপুর।
উত্তর : না। গাড়ি, রিক্সা বা বাইকে এমন কোন পুরুষের সাথে মহিলার একাকিনী যাওয়া বৈধ নয়, যার সাথে কোনও সময় তার বিবাহ বৈধ। বাস, ট্রেন, প্লেন বা জাহাজেও কোনো সফরে যাওয়া বৈধ নয়। এমনকি কোনো ইবাদতের সফরেও নয়। রাসূলুল্লাহ a বলেছেন, ‘আল্লাহ ও শেষ দিবসের প্রতি যে নারী ঈমান রাখে, এমন নারীর পক্ষে পিতা, সন্তান, স্বামী, ভাই কিংবা মাহরামের সঙ্গ ছাড়া একাকিণী তিনদিনের দূরত্বে সফর করা বৈধ নয়’ (ছহীহ মুসলিম, হা/১৩৪০; তিরমিযী, হা/১১৬৯)। অন্যত্র বর্ণিত হয়েছে, রাসূলুল্লাহ a বলেন, ‘নারী কোন মাহরাম ছাড়া যেন একদিন একরাত সফর না করে’ (ছহীহ বুখারী, হা/১০৮৮; মিশকাত, হা/২৫১৫)। উল্লেখ্য, সাময়িক সময়ের জন্য স্থানীয় কোথাও গেলে যদি ফিতনা থেকে মুক্ত হয় এবং অন্য কোন সাবালক ছেলে, পুরুষ বা মহিলা থাকে, তাহলে যাওয়া চলে। কিন্তু সফর হলে সঙ্গে মাহরাম ছাড়া মোটেই যাওয়া বৈধ নয়; যদিও সাথে অন্য মহিলা বা পুরুষ থাকে (ফাতাওয়া লাজনা দায়েমা, ১৭/৩৩৬)।
প্রশ্ন (১২) : শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে সাধারণত বিদায় অনুষ্ঠান পালন করা হয়। এটি কি শরীয়তসম্মত?
-সালমা, ঢাকা।
উত্তর : ছাত্র-ছাত্রীদের উপদেশ ও পথনির্দেশনা দেওয়া এবং মন্দ কর্ম হতে সতর্ক করার জন্য বিদায় অনুষ্ঠান করাতে কোন বাধা নেই। তবে অনুষ্ঠানটি কুরআন-সুন্নাহ ভিত্তিক হতে হবে এবং শরীয়ত বহির্ভূত সকল কাজ হতে মুক্ত থাকতে হবে। রাসূল a কোন সৈন্যদল অথবা কোন মেহমানকে বিদায় দানকালে উপদেশ দিতেন এবং তাদের জন্য দু‘আ করতেন (তিরমিযী, হা/৩৪৪৪; আবূ দাঊদ, হা/২৬০১; মিশকাত, হা/২৪৩৫-৩৭)। পক্ষান্তরে এসব অনুষ্ঠানে যদি নাচ-গান, ছাত্র-ছাত্রীদের মালাপ্রদান, ছবি তোলাসহ আরো বিভিন্ন প্রকার শরীয়ত বিরোধী কার্যকলাপ হয়ে থাকে, তাহলে তাতে যোগদান করা যাবে না। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘নেককাজ ও তাকওয়ায় তোমরা পরস্পর সাহায্য করবে এবং পাপ ও সীমালংঘনে একে অন্যের সাহায্য করবে না’ (আল-মায়েদা, ৫/২)।
আসসালামু আলাইকুম ওয়ারহমাতুল্লাহ। আভাস মাল্টিমিডিয়া.কম এ ওয়েবসাইটটি সম্পূর্ণরূপে বিশুদ্ধ ঈমান ও আমলের দাওয়াতী ওয়েবসাইট। এটি সম্পূর্ণ ব্যাক্তিগত উদ্যোগে পরিচালিত এবং কোন প্রকার দল / সংগঠনের অন্তর্ভুক্ত নয়। আমাদের আক্বীদাহ আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামা‘আতের আক্বীদাহ। আমাদের মানহাজ সালাফে সালেহীনদের মানহাজ। আমাদের দাওয়াত শিরকমুক্ত, কুফরমুক্ত, নিফাক্বমুক্ত ও বিদ‘আতমুক্ত ঈমান ও আমলের উপর প্রতিষ্ঠিত। তাওহীদ ও সুন্নাত ভিত্তিক ঈমান ও আমল গড়ে তোলাই আমাদের লক্ষ্য।
Leave a Reply